
বার্তাবাহক ডেস্ক : পুলিশ পরিচয় পাওয়ার পর ইন্সপেক্টর মামুন ইমরান খানকে(৩৮) নিচিহ্ন করে ফেলতে দুর্বৃত্তরা হত্যার পর লাশটি কালীগঞ্জের একটি জঙ্গলে এনে বস্তাবন্দি করে পুড়িয়ে ফেলে গেছে বলে পুলিশের ধারণা।
মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার রায়েরদিয়া এলাকার একটি জঙ্গল থেকে তার বস্তাবন্দি পোড়া লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত মামুন ইমরান খান (৩৪) ঢাকায় পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) স্কুল অব ইনটেলিজেন্সে পরিদর্শক পদে দায়িত্বে ছিলেন। তিনি ঢাকার নাবাবগঞ্জের রাজরামপু এলাকার মো. আজাহার আলীর ছেলে।
কালীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পংকজ দত্ত জানান, গত ৮ জুন মামুন তার সবুজবাগ এলাকার মধ্য বাসাবোর বাসা থেকে বনানী এলাকায় পারিবারিক অনুষ্ঠানে যান। এরপর একটি চক্র তাকে নারীসংক্রান্ত ঘটনায় জড়ানোর চেষ্টা করে। তারপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
৮জুন মামুন তার মধ্য বাসাবোর বাসা থেকে বনানী এলাকায় পারিবিারিক অনুষ্ঠানে যান। সেখানে যাওয়ার পর একটি চক্র তাকে নারী সংক্রান্ত একটি ঘটনায় জড়ানোর চেষ্টা করে। এরপর তারা তাকে সেখান থেকে অন্যত্র নিয়ে যায়। এরপর তার আর কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
ধারণা করা হচ্ছে চক্রটি নিজেদের রক্ষা করতে মামুনের পুলিশ পরিচয় পাওয়ার পর তাকে নিচিহ্ন করে ফেলতে পুড়িয়ে হত্যার পর লাশটি গাজীপুরের কালীগঞ্জের ঐ জঙ্গলে ফেলে গেছে। মামুনের এক বন্ধু প্রাথমিকভাবে মামুনের লাশটি সনাক্ত করেন। ওই বন্ধু পুলিশকে অনেক তথ্য জানিয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই আরো তথ্য পাওয়া যেতে পারে। এ ব্যাপারে তার বড় ভাই সবুজবাগ থানায় একটি সাধারন ডায়রী করেন। তবে পুলিশের ধারণা কোন পেশাদার খুনি এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার রায়েরদিয়া রাস্তার পাশের একটি জঙ্গলে বস্তাবন্ধি পা বের হওয়া একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আবু বকর মিয়ার উপস্থিতিতে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মরহেদটি আগুনে পোড়ানো এবং চেহারা বিকৃত হয়ে গেছে। গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. গোলাম সবুরসহ ঢাকার স্পেশাল ব্রাঞ্চের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
উলুখোলা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) মো. গোলাম মাওলা জানান, লাশটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজ উদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের একাধিক সুত্র জানায়, পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে মামুন ছিলেন ছোট। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অবিবাহিত। ২০০৫ সালে সাব-ইন্সপেক্টর হিসেবে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে (সিএমপি) যোগদান করেন তিনি। এরপর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে যোগ দেন। সেখান থেকে ফেরার আগেই ইন্সপেক্টর পদে পদোন্নতি লাভ করেন। রাজধানীর সবুজবাগ এলাকায় তার ভাইয়ের সঙ্গে থাকতেন। চলতি বছরের শেষ দিকে তিনি আবারও মিশনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তার সঙ্গে কারো শত্রুতা আছে- এমন কিছু কখনো বলেননি। তিনি সদালাপী ছিলেন।