
বার্তাবাহক ডেস্ক : মহানগরের মধ্যছায়াবীথি এলাকায় তুচ্ছ ঘটনার জেরে সাদেক আলী (৩২) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ছয় যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে মেহেদী হাসান বিজয় মধ্যছায়াবিথী এলাকার একটি প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য। এলাকায় আধিপত্য ধরে রাখার জন্য তার নেতৃত্বে হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যরাসহ সমবয়সী আরো কয়েকজন মিলে একটি বখাটে গ্রুপ পরিচালনা করে। ওই গ্রুপের সদস্যরাসহ তারা বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জিএমপি’র সদর থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে উপ-কমিশনার (উত্তর ও মিডিয়া) জাকির হাসান এসব তথ্য জানান।
নিহত সাদেক হোসেন শেরপুরের ঝিনাইগাতী থানার বাঁকাকোড়া এলাকার শাহ আলমের ছেলে। তিনি মধ্য ছায়াবিথী এলাকার ভাড়া বাসায় থেকে সেনেটারি মিস্ত্রির কাজ করতেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- প্রধান আসামি পশ্চিম ভুরুলিয়া এলাকার মো. শফিকুল ইসলামের ছেলে কাওসার আহমেদ আকাশ (২৩), শহরের মধ্য ছায়াবিথী এলাকার মো. আমজাদ হোসেন মুকুলের ছেলে মো. মেহেদী হাসান বিজয় (১৮), মারিয়ালী-কলাবাগান এলাকার মো. নুরুজ্জামানে ছেলে মো. শামীম (১৮), কালীগঞ্জ উপজেলার কলাপাটুয়া এলাকার মো. রেজাউল করিমের ছেলে ইমন আহমেদ (২০), সদর উপজেলার কুমুন এলাকার ইসমাইল হোসেনের ছেলে মোবারক হোসনে ওরফে মোবা (১৯) এবং মধ্য ছায়াবিথী এলাকার বাদল চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে নিলয় চন্দ্র বিশ্বাস (১৮)।
সংবাদ সম্মেলনে উপ-কমিশনার (উত্তর ও মিডিয়া) জাকির হাসান বলেন, নিহত সাদেক আলী ঘটনার দিন রাত পৌণে ৯টার দিকে তার ছেলের জন্য বিস্কুট কিনতে বাসা সংলগ্ন গোপালের দোকানে যায়। তখন অভিযুক্ত যুবকদের সঙ্গে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাদেক আলীর তর্ক-বিতর্ক হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের সরিয়ে দিলে সাদেক বাসায় চলে যায়। এরপর রাত ৯ টার দিকে অভিযুক্তরা সাদেক আলীকে বাসা থেকে ডেকে রাস্তায় আনে। একপর্যায়ে তাকে মারধর শুরু করে ও চাইনিজ কুড়াল দিয়ে গলায় আঘাত করে অভিযুক্তরা। পরে সাদেক আলীর মৃত্যু হলে পালিয়ে যায় ওই যুবকরা।
উপ-কমিশনার (উত্তর ও মিডিয়া) জাকির হাসান আরো বলেন, শুক্রবার নিহত ছাদেকের ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে চার জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে প্রযুক্তির সাহায্যে শুক্রবার সন্ধ্যায় মহানগরের কাশিমপুর নয়াপাড়া এলাকা থেকে মামলার প্রধান আসামি কাওসার আহমেদ আকাশকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়াও আত্মগোপনে থাকা মামলার আরো তিনজনকে শুক্রবার রাতে কালীগঞ্জের কলাপাটুয়া এলাকার অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তাদের দেয়া তথ্যমতে দক্ষিণ ছায়াবিথী এলাকা থেকে সহযোগী মোবারক হোসনে ওরফে মোবা ও নিলয় চন্দ্র বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এছাড়াও তিনি আরো জানান, গ্রেপ্তার কাওসার আহমেদ আকাশকে নিয়ে ঘটনাস্থলের পাশের একটি পার্কে অভিযান চালিয়ে তার দেখানো ময়লার স্তুপ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাইনিজ কুড়াল উদ্ধার করে জব্দ করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃত্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে উপ-কমিশনার (উত্তর ও মিডিয়া) জাকির হাসান বলেন, ”গ্রেপ্তার মেহেদী হাসান বিজয় মধ্যছায়াবিথী এলাকার একটি প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য। এলাকায় আধিপত্য ধরে রাখার জন্য তার নেতৃত্বে হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যরাসহ সমবয়সী আরো কয়েকজন মিলে ওই এলাকায় বখাটে একটি গ্রুপ পরিচালনা করেন। ওই গ্রুপের সদস্যরাসহ তারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে সহকারী পুলিশ কমিশনার থোয়াই অং প্রু মারমা, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।